১৯৬৭ সালে জাপানে সর্বপ্রথম কাওয়াসাকি নামের এক রোগের সন্ধান পাওয়া যায় এবং জাপানি আবিষ্কারক ‘টমিসাক কাওয়াসাকি’র নামানুসারে এই রোগের নামকরণ করা হয় ‘কাওয়াসাকি’।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন এই রোগটি কমবেশি হচ্ছে। প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০১০ সাল থেকে ঢাকায় এখন পর্যন্ত ৮৯ জন কাওয়াসাকি রোগী পাওয়া গেছে, যাদের গড় বয়স ৪.৭ বছর। ২০১৫ সাল থেকে বারডেম হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১২ জন শিশুর এই স্বনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে, যারা নিয়মিত ফলোআপে ভালো আছে।
কারণ: শিশুদের জাপানি রোগ বলে পরিচিত কাওয়াসাকি ঠিক কী কারণে হয়, তা এখনো অজানাই রয়ে গেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেও এই রোগের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারেননি। আগে ধারণা করা হতো, রোগটি ইনফেকশনজনিত; কিন্তু এখন বলা হচ্ছে—বংশগত, পরিবেশগত (রাসায়নিক নানা বিক্রিয়া), জীবাণু সংক্রমণ ইত্যাদি কারণে এই রোগ হতে পারে।
কাদের হয়: সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাওয়াসাকি রোগ বেশি হয়। মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের বেশি হয়। তবে রোগটি ছোঁয়াচে নয় বিধায় পরিবারে কোনো শিশুর হলে অন্যজনের হওয়ার আশঙ্কা নেই। শিশুদের বেশি হলেও এই রোগ বড়দেরও হতে পারে।
উপসর্গ: কাওয়াসাকি রোগের কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ রয়েছে যেমন:
► কাওয়াসাকিতে আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরে অনেক দিন (পাঁচ দিনের বেশি) ধরে ভুগে থাকে। প্যারাসিটামল প্রয়োগ করেও তেমন কাজ হয় না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও জ্বরের তেমন কারণও বের করা যায় না।
► মুখ ও শরীরে লাল আভা থাকে। জিব লাল হয় (একে বলে স্ট্রবেরি জিব)। তবে চোখ অস্বাভাবিক লাল হলেও কোনো পুঁজ বা পিঁচুটি থাকে না। ঠোঁট ফেটে লাল ও শুকনো হয়ে যেতে পারে।
► গলার গ্ল্যান্ড বা ঘাড়ের এক পাশের লসিকাগ্রন্থিগুলো ফুলে যেতে পারে।
► হাত-পা, যৌনাঙ্গে চামড়ায় নানা ধরনের দানা, চুলকানি ইত্যাদি হতে পারে।
► হাত ও পায়ের আঙুলে পানি জমে ফুলে যেতে পারে, পরবর্তী সময়ে আঙুলের মাথা থেকে চামড়া উঠে যেতে পারে।
► মেজাজ খিটখিটে ধরনের হয়। তীব্র মাথা ব্যথা হতে পারে।
► অস্থিসন্ধি (গিরা) ফোলা ও ব্যথা থাকতে পারে।
► এই রোগের মারাত্মক জটিলতা হলো, হার্টের করোনারি আর্টারি আক্রান্ত হয়ে দুর্বল ও প্রসারিত হয়ে যাওয়া। যার ফলে পরবর্তী সময়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
Be the first to comment