স্লিপডিস্ক নিরাময়ে ফিজিওখেরাপি

পিঠে ব্যথার মত সমস্যা ভীষণ সাধারণ। কম বেশি সব মানুষই কোনও না কোনও সময় পিঠ বা কোমরে যন্ত্রণা অনুভব করেন। সামান্য চোট-আঘাত ছাড়াও বেকায়দায় ওঠা-বসা, এছাড়া ভারি জিনিস তুললে অনেক সময় পিঠ এবং কোমরে ব্যথার সমস্যা হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরকম ছোট-খাটো ব্যাক পেনের সমস্যা কিছু দিনের মধ্যেই সেরে যায় কিন্তু ব্যথা একমাসের বেশি সময় ধরে থাকলে বা বারবার ফিরে এলে অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এরকম ক্ষেত্রে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লায়োর ব্যাক অর্থাৎ মেরে ব্যথা নিয়েই বেশিরভাগ মানুষ সমস্যায় ভােগেন। স্পাইন বা শিরদাঁড়া এবং মাংসপেশিতে ব্যথার অনুভূতি সব সময় সাধারণ চোট আঘাতে জন্য নাও হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, এগুলি বড় কোনও সমস্যার পূর্বাভাস। পিঠের বা কোমরের অসহ্য যন্ত্রণার পিছনে পি ডিস্ক, স্কিয়াটিকা, অথবা অ্যান্ডিলুজিং স্পন্ডেলাইটিসের মত কারণও লুকিয়ে থাকতে পারে। এই সংখ্যায় আমরা আলোচনা করছি এরকমই একটি সমস্যা-পি ডিস্ক নিয়ে।
স্লিপ ডিস্ক:
আমাদের শিরদাঁড়া ৩৩টা ভার্টিব্রা দিয়ে তৈরী। প্রতিটা ভার্টিব্রার মাঝে থাকে ফাইবার দিয়ে তৈরী শক্ত গোলাকার প্যাডের মত দেখতে সংযােগকারী কোষ বা কাটিলেজ যাকে বলে ডিস্ক। ডিস্কগুলোর মধ্যে থাকে জেলের মত পদার্থ। শিরদাড়ার মুভমেন্টে বড় ভূমিকা পালন করে এই ডিস্ক। পি ডিস্কের সমস্যায় এক বা একাধিক ডিস্থ ক্ষতিগ্রস্থ বা স্থানচ্যুত হয়ে নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এরকম অবস্থায় ডিস্কের বাইরের আবরণ ভেঙে বা চিড় ধরে ভেতরের জেলটা বাইরে বেরিয়ে আসে আর শিরদাড়া আস্তে আস্তে নমনীয়তা হারাতে থাকে। ডিস্ক স্থানচ্যুত হয়ে সিয়াটিক নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করলে যন্ত্রণা আস্তে আস্তে পিঠ, কোমর, হিপ ছাড়িয়ে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া মাংসপেশীতে ব্যথা, ভুলুনি, অবশ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে। হাঁচলে বা কাশলেও শরীর ব্যথায় ঝনঝন করে ওঠে। পি ডিস্কে রাতের দিকে ব্যথা বেশি বাড়ে। চলাফেরা করা, দাঁড়ানো, বসার মত স্বাভাবিক কাজগুলো করাও অসম্ভব হয়ে ওঠে।
পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্লিপ ডিস্কের সমস্যা বিশ্রাম, সামান্য ব্যায়াম, ওষুধ আর ফিজিওথেরাপিতে মােটামুটি চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু ট্রিটমেন্ট কি হবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সমস্যা কতটা
ট্রিটমেন্টঃ
স্লিপ ডিস্ক সাধারনত ৩০-৫০ বছরের মানুষদের মধ্যে দেখা যায়। পি ডিস্কের সমস্যা ছেলেদের থেকে মেয়েদের মধ্যে বেশি চোখে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্লিপ ডিস্কের সমস্যা বিশ্রাম, সামান্য ব্যায়াম, ওষুধ আর ফিজিওথেরাপিতে মােটামুটি চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু ট্রিটমেন্ট কি হবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সমস্যা কতটা গভীর তার উপর। এরকম সমস্যায় মুভমেন্ট স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন নিয়মিত রাখা দরকার । অতিরিক্ত ব্যথার জন্য ভয় পেয়ে স্বাভাবিক মুভমেন্টগুলো করা বন্ধ করে দিলে সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে । পি ডিস্কের সমস্যায় ফিজিওথেরাপি খুব ভালো কাজ করে। ফিজিওথেরাপিতে অবশ, শক্ত হয়ে যাওয়া মাংসপেশীর সঞ্চালন স্বাভাবিক হয় এবং যন্ত্রণা আস্তে আস্তে কমে যায়। অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর সমস্যা বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী এক্সারসাইজ বা ট্রিটমেন্ট শুরু করেন, যাতে যন্ত্রণা কমে এবং আরো বড় ক্ষতি না হয়। নিয়মিত এক্সারসাইজ এবং থেরাপি অবশ, স্টিফ হয়ে যাওয়া মাংসপেশির সংকোচন-প্রসারণ বা মুভমেন্ট আবার স্বাভাবিক করে তোলে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এবং প্রেসক্রাইব
করা এক্সারসাইজ ছাড়া অন্য কোনও এক্সারসাইজ করা উচিত নয়। পি ডিস্কের সমস্যা ওষুধ, ফিজিওথেরাপি, এক্সারসাইজ, বিশ্রাম এবং যত্নের মাধ্যমেই সেরে যায়।
তবে অবস্থা বিশেষে সমস্যা সঙ্গীন হলে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। ছয় সপ্তাহের মধ্যে ওষুধ, ফিজিওথেরাপি এবং এক্সারসাইজের মাধ্যমে যন্ত্রণা না কমলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
সেক্ষেত্রে ডাক্তার পুরো ডিস্ক বাদ না দিয়ে মাইক্রোডিস্কেটমির মাধ্যমে ডিস্কের ক্ষত্মিস্থ অংশটুকু বাদ দিয়ে দেন। অবস্থা আরও গুরুতর হলে ল্যামিনেটমির মাধ্যমে ডিস্কটা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে কৃত্রিম ডিস্ক বসানো হয়।
| ইয়োর হেলথ কেয়ার ব্যাক পেন বা পিঠের ব্যথা, পি ডিস্কের মত সমস্যায় পেশেন্টের সাহায্য করার জন্য চিকিৎসা সম্পকে গাইডেন্স থেকে শুরু করে, ডক্টরস অ্যাপয়েন্টমেন্টের ব্যবস্থা করে দেওয়া, বাড়িতে ফিজিওথেরাপি পরিষেবা, এমনকি অপারেশনের প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেয়। শুধু তাই নয় ট্রিটমেন্ট চলাকালীন হাসপাতালে উপস্থিত ইয়োর হেলথ কেয়ার ডেস্ক থেকে রোগীর 1/1 সুবিধা-অসুবিধার খেয়াল রাখা ছাড়াও রোগীর আত্মীয় রোগীর অবস্থা সম্পকে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানানো হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*