আই. ভি. এফ বা কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে আছে। কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় ল্যাবরেটরিতে সৃষ্ট ভ্রণ নিয়েও প্রচুর অবিশ্বাসের ফিস ফাস। অনেকেই মনে করেন- এই চিকিৎসা খুবই ব্যয় সাপেক্ষ, সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরে, অসহ্য ব্যথার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় এই চিকিৎসায়, নয় মাস বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়, টেস্ট টিউবের মধ্যে তৈরী হওয়ার জন্য বিকলাঙ্গ শিশু তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, জন্মের পরেও এই শিশুদের কাঁচের ঘরে রেখে দিতে হয় সবার সঙ্গে মেলামেশা। করতে দেওয়া হয় না – এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। গত ৩৫ বছরে সারা বিশ্বে ৫০ লক্ষেরও বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে আই. ভি, এফ পদ্ধতিতে। সত্যিই যদি এই সব ভ্রান্ত। ধারণা যদি ঠিক হতো তাহলে কী এত বছর ধরে এত মানুষ এই চিকিৎসা করাতেন?
এছাড়া আই, ভি, এফ এর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধাও রয়েছে যেমন এমব্রায়ো ট্রান্সপ্লান্টেশন এর পূর্বে বা ভ্রণ প্রতিস্থাপনের আগে একটু মাপা পদক্ষেপ অর্থাৎ জেনেটিক ডায়াগনসিস। করলে নিতান্তই ‘টেলার-মেড়’ ভ্রণ জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা যায়। এতে জন্মগত বা জিনবাহিত নানা অসুখ থেকে পরবর্তী। প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। যা অন্য অর্থে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ হিসেবেই ধরা যেতে পারে।
স্বাভাবিক প্রথাগত পদ্ধতিতে যখন কেউ গর্ভবতী হন – তখন চিকিৎসকের পক্ষে গর্ভস্থ ভ্রণের জিন ঘটিত কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা তা বোঝা বেশ কঠীন। দেহের বাইরে থেকে আল্টা সোনোগ্রাফি পরীক্ষা করে প্রাণের প্রাণ স্পন্দন ও আকার আকৃতি ইত্যাদি বিষয়ে বেশ অনেকটাই ধরণা তৈরি হয়। কিন্তু জ্বণের। মধ্যে জেনেটিক কোনো সমস্যা বা জন্মগত অসুখ থেকে গেল কিনা তা নির্ণয় করা অসম্ভব প্রায়। এখানেই বাজিমাত করেছে আই. ভি. এফ। কারণ এই পদ্ধতিতে প্রি-ইমপ্লান্টেশন জেনেটিক ডায়াগনসিস-এর মাধ্যমে ভ্রণ প্রতিস্থাপনের আগেই জেনে। যাওয়া যায় এই ধরনের কোনো অসুখ, শারীরিক সমস্যা সদ্যোজাতর মধ্যে থাকবে কিনা। যদি দেখা যায় যে তেমন কোনো বড় সমস্যা রয়েছে তখন কিন্তু সেই ত্রুটিপূর্ণ ভ্রণকে প্রতিস্থাপন করা হয় না। ফলে আই, ভি, এ পদ্ধতিতে ভুল চুকের স্থান খুবই কম। অনাগত সন্তানের স্বাস্থহানী নিয়েও চিন্তার অবকাশ থাকে কমই। কিভাবে হয় এই পরীক্ষা? সাধারণত যে সব কোষ পরবর্তীকালে প্লাসেন্টা তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে। এমন কিছু কোষ সংগ্রহ করা হয় গবেষণাগারে থাকা ভ্রণ থেকে। এরপর গবেষণাগারে সেই কোষগুলির জিন বিশ্লেষণ করা হয়। পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে। বিস্তারিত গবেষণার পর জ্বণের সুস্থতা বিষয়ে নিশ্চিত হলেই সেই ভ্রণ প্রতিস্থাপন করা হয়।
অনেকের মনে একটা আশঙ্কা থাকে যে সদ্য তৈরি হওয়া জ্বণের থেকে কোষ তুলে নিলে ভবিষ্যতে ভ্রণ যখন মানব দেহের আকার নেবে তখন তাতে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবে
- 175/1/1/A, Gopal Tagore Road, Kolkata, WB – 700108
- info@healthplusindia.in
Be the first to comment