সব বুকে ব্যাথা হার্ট অ্যাটাক নাও হতে পারে

আমাদের এক ধরনের সাধারণ অভ্যাস আছে বুক ব্যথা হলেই ধরে নেওয়া হয় হার্ট অ্যাটাক। এভাবে সরলীকরণ করার কোনাে মানেই হয় না। আর যেখানে রুটিন বুকের এক্সরে, ইকো অর্ডিওগ্রাম বা সিটি স্ক্যান। করলেই অনেক সময় ধরা পড়ে অ্যাওটিক অ্যানিউরিজম, অ্যাটিক ডিসেকসন -এর মতো হৃদযন্ত্রের জটিলতম সমস্যা। অ্যাওটা বা মহাধমনী হৃচ্ছ হৃদযন্ত্রের মুল। রক্তসঞ্চালনকারী রক্তনালী। আর মহাধমনীর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, ছিড়ে যাওয়া ভিতরের স্তরে ক্ষত হওয়া বা মহাধমনীর গোড়ায় ক্ষত অথবা আলগা হয়ে যাওয়া যদি সময়ে ধরা না পড়ে তাহলে প্রাণ সংশয় হতে পারে। তাই বুকের। ব্যথা শুরু হলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। | মহাধমনীর মূল সমস্যাগুলি হচ্ছে বড় হওয়া বা অ্যাওটিক অ্যানিউরিজম, মহাধমনী ছিড়ে যাওয়া বা অ্যাওটিক ডিসেকশন, মহাধমনীর গোড়া আলগা হয়ে যাওয়া বা অ্যাওটিক রুট ডায়লেশন এবং দুর্ঘটনা জনিত কারণে মহাধমনী টুকরো হওয়া বা আওটিক ট্রানসেকশন। | গবেষনায় দেখা গেছে যে মূলত ‘জন্মগত ত্রুটি থেকেই অনেকের মহাধমনী বড় হাতে থাকে। মারফ্যান’স রোগ সহ অন্যান্য রোগ। থেকেও মহাধমনীর স্ফীতি পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া হাইপার টেনশন, উচ্চ রক্তচাপ, ব্লাড় সুগার, অন্য ধমনীতে ব্লকেজ হলেও মহাধমনীর সমসা পতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভাবস্থাতেও মহাধমনী বড় হয়ে ছিড়ে যেতে পারে।তাই গর্ভাবস্থায় বুক ব্যথা বা বুক ধড়ফড় হলে সাবধান। তাছাড়া আগে যদি হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে তাতেও মহাধমনীর সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সব থেকে ভায়ের হাচ্ছে মহাধমনীর সমস্যা। এমনিতে প্রায় বোঝাই যায় না। যাদের জন্মগত ত্রুটি বা মারফ্যান’স রোগ আছে তাদের ক্ষেত্রে তাও কিছুটা বোঝা যায়। বুক ধড়ফড় করতে পারে, আঙ্গুল লম্বা হয়ে যেতে পারে, বিভিন্ন গাট শিথিল হয়ে যেতে পারে। এই সব লক্ষণ দেখলে সাবধান। আর যাদের অ্যাওটিক ডিসেকশন হয়ে যায় তাদের তীব্র যন্ত্রনা অনুভূত হয়। বুক, পিঠ এমনকি কোমর বেয়ে পায়েও ব্যথা হতে পারে। তবে একবার যদি মহাধমনী আক্রান্ত হয় বা চিড় ধরে, কেটে যায় সার্জারিই একমাত্র নিরাময়ের পথ।ক্ষতিগ্রস্ত মহাধমনীটিকে কেটে বাদ দিয়ে তার জায়গায় কৃত্রিম মহাধমনী প্রতিস্থাপন করা হয়। এ বেশ জটিল অপারেশন। আরও জটিল হয়ে যায় যদি মহাধমনীর গোড়ার দিকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন কিন্তু সেখানকার অ্যাওটিক ভালভটিও বদলাতে হয় তখন সমস্ত প্রস্তুতি সেরে নিয়ে। অস্ত্রোপচার করতে ১২ থেকে ১৮ ঘন্টাও লাগে।
আর অপারেশনের পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, মেদ কমানোর ওষুধ খাওয়া, নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা চাই। অতি অবশ্যই ধূমপানের অভ্যাস থাকলে বর্জন করুন সুস্থ জীবনের লক্ষ্যে। আর বুকে ব্যথা অনুভব। করলে সাবধান হন।
লেখক এন এইচ রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্সেস-এর বিশিষ্ট হৃদ শল্যবিদ

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*